বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ০১:০০ পূর্বাহ্ন
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক :: ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে শুক্রবার ক্রামাটোর্স্ক শহরের একটি রেলস্টেশনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কয়েক ডজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পশ্চিমা দেশগুলোকে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুরোধ করেছে যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যাতে ইউক্রেনীয় বাহিনীর কর্মকাণ্ডের একটি নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করে, তাদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে এবং সেই সঙ্গে কিয়েভকে অগ্রহণযোগ্য যুদ্ধ পদ্ধতি ত্যাগ করার আহ্বান জানায়।
ক্রামাটোর্স্ক রেলস্টেশনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য মস্কো দায়ী করেছে কিয়েভকে। হামলার সময় রেলস্টেশনে থাকা ব্যক্তিরা যুদ্ধাঞ্চল ত্যাগের চেষ্টা করছিল। সে সময় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করলে ৫ জন শিশুসহ ৫০ জন মারা যায়।
রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দাবি, তারা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ এলাকা চিহ্নিত করতে পেরেছে। ক্রামাটোর্স্কের দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর ডোব্রপোল থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছে। শহরটি ইউক্রেনীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছিল, রেলস্টেশনে হামলাটি চালানো হয়েছে ইউক্রেনের তোচকা-ইউ ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলাকে ‘বর্বর আক্রমণ’ বলে নিন্দা করেছে এবং বলেছে যে এই হামলাই প্রমাণ করে যে রাশিয়ার স্বীকৃত ডনবাস অঞ্চলের দুটি প্রজাতন্ত্রকে সুরক্ষার জন্য রাশিয়ার সামরিক অভিযান সঠিক ছিল।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা মনে করি, কিয়েভ ন্যায়বিচার এড়াতে পারবে না।’
যা বলছে ইউক্রেন
ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় রেল কোম্পানি বলছে কারমাটোর্স্ক রেলস্টেশনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
এই যুদ্ধের মধ্যেই ইউক্রেনের যে কয়টি রেলস্টেশন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, তার মধ্যে কারমাটোর্স্ক রেলস্টেশন একটি। এই রেলস্টেশনটি পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ এলাকা থেকে বেরিয়ে আসার একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ।
দোনেৎস্ক অঞ্চলের গভর্নর জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় হাজার হাজার মানুষ রেলস্টেশনে ভিড় করেছিল এই এলাকা ছাড়ার জন্য। ইউক্রেনের রেলের প্রধান বলেছেন, দুটি ক্ষেপণাস্ত্র স্টেশনে আঘাত হেনেছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।